অদম্য মনার কাছে হার মেনেছে প্রতিবন্ধিতা


প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৪, ২:২২ অপরাহ্ণ / ২৯২
অদম্য মনার কাছে হার মেনেছে প্রতিবন্ধিতা

কামরান হোসেনঃ



অদম্য শক্তিতে অনেক বাঁধাই পেরিয়ে গেল জুড়ীর মনা বেগম। জন্মগতভাবে শারিরীক প্রতিবন্ধী হয়েও মনা এবার শাহ নিমাত্রা সাগরনাল ফুলতলা ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। সে স্বপ্ন দেখে একদিন শিক্ষক হয়ে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিবে। পরিবারের হাল ধরবে সে। শত বাধা তুচ্ছ করে এগিয়ে চলার এ উদাহরণ এলাকাবাসীর কাছেও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। 

সমাজের আর দশটা সাধারণ মানুষের মতো স্বাভাবিক নয় মনা বেগমের জীবন। জন্মগতভাবেই শারীরিক প্রতিবন্ধী সে। নিজের এক পা ও এক হাতের উপর ভর দিয়ে চলাফেরা করতে হয়।

মনা বেগমের বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ি ইউনিয়নের এলাপুর চা বাগানে। শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি তার আগ্রহ। 

শামসউদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক ও সাগরনাল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাশ করে । এখন শাহ নিমাত্রা সাগরনাল ফুলতলা ডিগ্রি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ছে সে।

মনা বেগম বলেন, “আমার বাবা একজন কৃষক, অন্যের জমি চাষ করেন। আমার আরো ২ ভাই-বোন লেখাপড়া করছে। তাদের পড়ালেখার খরচ যোগাতে বাবাকে হিমশিম খেতে হয়। আমাদের অভাব অনটনের সংসার। “

মনা বেগম আরোও জানান, “আমার হাঁটতে অনেক কষ্ট হয়। অন্যান্যদের মতো চলাফেরা করতে পারি না, তারপরও আমি পড়ালেখা বাদ দিবো না। আমার ইচ্ছা আমি একজন শিক্ষক হবো। এটাই আমার আসল স্বপ্ন। আমি মনে করি সেই স্বপ্ন একদিন পূরণ হবে।”

মনার বাবা বলেন, “আমি একজন কৃষক। আমার ৫ সন্তানের মধ্যে মনা বেগম ৩য় এবং আমার ৩ সন্তান লেখাপড়া করছে। তাদের লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া আমার জন্যে অনেক কস্টকর।”


শাহ নিমাত্রা সাগরনাল ফুলতলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ জহির উদ্দিন বলেন, “মনা বেগম বর্তমান সমাজের জন্য এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। সে দেখিয়ে দিচ্ছে যে লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ আর ইচ্ছাশক্তি থাকলে কোনো কিছুই বাঁধা হতে পারে না। আমি সর্বদা তার উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করি।”