গ্রীষ্মকালীন ফল: পুষ্টিগুণে ভরপুর ঋতুর উপহার
মে ২৩, ২০২৫


প্রকাশের সময় : মে ২৪, ২০২৫, ৫:১৫ পূর্বাহ্ণ / ২৫৯
গ্রীষ্মকালীন ফল: পুষ্টিগুণে ভরপুর ঋতুর উপহার<br>মে ২৩, ২০২৫

জুড়ী :প্রতিনিধি


ভূমিকাঃ বাংলাদেশে গ্রীষ্মকালে বিভিন্ন রকমের রঙিন ও সুস্বাদু গ্রীষ্মকালীন ফল পাওয়া যায়, যা কেবল স্বাদের জন্য নয়, বরং স্বাস্থ্য উপকারিতার দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ের ফলগুলো শরীর ঠান্ডা রাখতে, পানিশূন্যতা দূর করতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

গ্রীষ্মকালীন ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতাঃ বাংলাদেশের গ্রীষ্মকালীন ফলের তালিকা ও পুষ্টিগুণ খুবই সমৃদ্ধ, যেখানে আম, লিচু, কাঁঠাল, তরমুজ, বেল ইত্যাদি রয়েছে। এ ফলগুলোর প্রতিটিতে রয়েছে আলাদা আলাদা খাদ্যগুণ ও ভিটামিন, যা শরীরের প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ করে।

শরীর ঠান্ডা রাখতে গ্রীষ্মকালীন ফলের ভূমিকাঃ গ্রীষ্মকালীন ফল খাওয়ার মাধ্যমে শরীরের পানির ঘাটতি পূরণ হয় এবং শরীরে শীতলতা আসে। বিশেষত তরমুজ ও বেলের মতো ফলগুলো গরমে আরাম দেয়। তাই স্বাস্থ্য সচেতনতায় এই ফলগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম।

গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি ফল ও তাদের প্রাপ্তির সময়ঃ এই সময়ে বাজারে যেসব গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি ফল পাওয়া যায়, সেগুলো সাধ্যের মধ্যে হলেও অনেকেই এসব ফলের পুষ্টিমান জানেন না। অথচ আমে রয়েছে ভিটামিন-এ, লিচুতে ভিটামিন-সি এবং কাঁঠালে ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা হজম ও রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।

পানিশূন্যতা রোধে গ্রীষ্মকালীন ফলের ভূমিকাঃ প্রচণ্ড গরমে শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে প্রচুর পানি ও লবণ বেরিয়ে যায়। এমন সময় গ্রীষ্মকালীন ফল যেমন তরমুজ, খিরসা ও শশা খেলে তা শরীরের ইলেকট্রোলাইট ব্যালান্স বজায় রাখে এবং ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধ করে।

শিশুদের খাবারে গ্রীষ্মকালীন ফলের ব্যবহারঃ অনেকেই শিশুর খাবারে ভিটামিন ও মিনারেলের ঘাটতির কথা বলেন, অথচ প্রাকৃতিকভাবে গ্রীষ্মকালীন ফল দিয়ে বাচ্চাদের খাবার তৈরির রেসিপি বানানো যায় যা পুষ্টিকর ও উপকারী। যেমন: লিচু স্মুদি, আমের পায়েস ইত্যাদি।

ত্বকের যত্নে গ্রীষ্মকালীন ফলঃ চর্মরোগ, ব্রণ বা অতিরিক্ত গরমে ত্বকের নানা সমস্যা হয় গ্রীষ্মে। কিন্তু গ্রীষ্মকালীন ফল যেমন পেঁপে ও তরমুজ ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় ও শীতলতা দেয়, যা প্রাকৃতিক রূপচর্চায় কার্যকর।

রোজায় গ্রীষ্মকালীন ফলের উপযোগিতাঃ রোজাদারদের জন্যও এই সময়ের ফল খাওয়াটা বেশ উপকারী। ইফতারে এক প্লেট গ্রীষ্মকালীন ফলের সালাদ খেলে শরীরের ক্লান্তি দূর হয় এবং একাধিক ফলের পুষ্টিগুণ একসঙ্গে পাওয়া যায়।

স্বাদ ও স্বাস্থ্য রক্ষায় গ্রীষ্মকালীন ফলঃ স্বাস্থ্য ও স্বাদের ভারসাম্য রাখতে গরমে গ্রীষ্মকালীন ফল অপরিহার্য। এই সময়ের ফলগুলো যেমন সুস্বাদু, তেমনি হজমে সহায়ক ও রোগ প্রতিরোধী, যা শরীরকে সতেজ ও চাঙা রাখে।

ফল সংরক্ষণ করে পুষ্টি বজায় রাখাঃ গ্রীষ্মকালীন ফল সংরক্ষণের উপায় জানলে বছরব্যাপী এই ফলের স্বাদ ও পুষ্টি উপভোগ করা সম্ভব। যেমন: কাঁচা আমের আচার, তরমুজের রস সংরক্ষণ ইত্যাদি।

উপসংহার: প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় গ্রীষ্মকালীন ফল অন্তর্ভুক্ত করলে শরীর সুস্থ ও মন প্রফুল্ল থাকবে। তাছাড়া ফল খাওয়ার মাধ্যমে প্রাকৃতিকভাবে ওষুধের ওপর নির্ভরতা কমানো সম্ভব।

পিংকু চন্দ্র পাল

সহকারী প্রধান শিক্ষক

লাউতা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়

বিয়ানীবাজার, সিলেট