দেলাওয়ার হোসেন
ক্লাসেন ঝড়ের পর বোলিংয়ের তোপের মুখে পড়েছে ইংল্যান্ড। রান পাহাড় তাড়া করতে নেমে মাত্র ১০০ রানে ৮ উইকেট হারাতে হয়েছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের। কোয়েৎজি-জানসেন-এনগিদি ত্রয়ীর বোলিং আঘাতে গুড়িয়ে গেছে ইংলিশ শিবির। দক্ষিণ আফ্রিকান বোলারদের সামনে ইংলিশ টপ অর্ডার ও মিডল অর্ডারের ব্যাটারদের কেউ থিতু হতে পারে নি। ৪০০ রান তাড়া করতে নেমে ১৭০ রানে গুটিয়ে যায় ইংলিশরা। ২২৯ রানের বিশাল ব্যবধানের হার ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের জন্য চরম লজ্জার। আজকের দিনটি নিশ্চয়ই মনে রাখতে চাইবেন না বাটলার, মালান ও স্টোকরা।
১০০ রানে ৮ উইকেট পড়ার পর লোয়ার অর্ডার ব্যাটার গুস আটকিসন ও মার্ক উড গড়েন ৭০ রানের পার্টনারশিপ। ইংলিশদের পক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান ১০ নাম্বার ব্যাটার মার্ক উডের। ১৭ বলে ৪৩ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন তিনি। তাকে সঙ্গ দেওয়া গুস আটকিসন ব্যক্তিগত ২১ বলে ৩৫ রান করে কেশব মহারাজের বলে সাজঘরে ফিরেন। ইনজুরির কারণে রিস টপলি ব্যাট করেন নি। ফলে ঐ ১৭০ রানেই থামতে হয় ইংলিশদের।
শনিবার (২১ অক্টোবর) মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় দক্ষিণ আফ্রিকা-ইংল্যান্ড। টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় ইংল্যান্ড। দীর্ঘদিন পর আজ ম্যাচে ফিরেন তারকা অলরাউন্ডার বেন স্টোকস। ফিল্ডিং নিয়ে শুরুটা দারুণ হয় ইংলিশদের। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই সাজঘরে পাঠান ইনফর্ম ওপেনার কুইন্টন ডি কককে। রেস টপলির বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।
যদিও ডি ককের উইকেট পাওয়ার ক্ষেত্রে অধিনায়ক বাটলারের দক্ষতার তারিফ করতেই হয়। আম্পায়ার জোড়ালো আবেদনে সাড়া না দিলে আত্মবিশ্বাসী বাটলার দ্রুতই রিভিউ নেন। রিভিউয়ে দেখা যায়, বল ডি ককের ব্যাট ছুঁয়ে উইকেটরক্ষকের হাতে গিয়েছে।
তবে ডি ককের বিদায়ের পরও রানের চাকা সচল ছিল প্রোটিয়াদের। আরেক ওপেনার রেজা হেনড্রিকসের সঙ্গে তিন নম্বরে নামা ডুসেন ১২১ রানের জুটি গড়েন। আদিল রশীদের বলে বেয়ারস্টোর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ডুসেন করেন ৬০ রান। ৬১ বলের মোকাবিলায় তিনি ৮টি চার মারেন। নিয়মিত অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার অসুস্থতার কারণে এ ম্যাচে সুযোগ পাওয়া হেনড্রিকস ছিলেন আরও আগ্রাসী। মাত্র ১৫ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করা হেনড্রিকসের ইনিংসটি সাজানো ছিল নয়টি চার ও তিনটি ছ্ক্কায়।
দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মার্করাম এই ম্যাচে অর্ধশতকের আগেই টপলির দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফেরেন ৪২ রানে। পাঁচ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ইংলিশ বোলারদের ওপর শুরুতে চড়াও হন হেনরিখ ক্লাসেন। তার আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে খেই হারায় মার্ক উড-উইলিরা। তাকে দারুণ সঙ্গ দেন মার্কো জানসেন। এই জুটিতে আসে ১৫১ রান।
৬১ বলেই সেঞ্চুরি তুলে নেন ক্লাসেন। অ্যাটকিনশনের বলে আউট হয়ে ফেরার আগে ১০৯ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন তিনি। এজন্য মাত্র ৬৭ বল মোকাবিলা করেন। ১২ টি চার ও ৪টি ছক্কায় সাজানো ছিল তার ইনিংস। তবে শেষ ওভারে অ্যাটকিনশনের কামব্যাকের কারণে প্রোটিয়াদের ইনিংস আরও বড় হয়নি। ৫০তম ওভারে তিনি খরচ করেন মাত্র ৫ রান। ওই ওভারে উইকেট তুলে নেন দুইটি। শেষ পর্যন্ত জানসেন অপরাজিত ছিলেন ৭৫ রানে। ৪২ বলের ইনিংসে তিনি ছয়টি ছক্কা এবং তিনটি চার মারেন। ফলে দক্ষিণ আফ্রিকা নিজেদের নামের পাশে আজ ৩৯৯ রান তুলে ফেলে।
আপনার মতামত লিখুন :