২ফুট গর্তের ভিতর ডুকিয়ে প্রতিবন্ধী শিশুকে খাবার খাওয়ান মা।


প্রকাশের সময় : জুন ১৭, ২০২৫, ৯:১৫ পূর্বাহ্ণ / ২৩
২ফুট গর্তের ভিতর ডুকিয়ে প্রতিবন্ধী শিশুকে খাবার খাওয়ান মা।

কামরান হোসেন:জুড়ী প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার চা-শ্রমিক পরিবারের সন্তান গোপাল সাঁওতাল। সাঁওতালকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয় মাটির গর্তে। বিশেষ করে ক্ষুধার সময় প্রচণ্ড কান্নাকাটি করলে শিশুটিকে গর্তে ঢুকিয়ে খাবার খাওয়ান তার মা সনচড়ি সাওতাল।
তার বয়স মাত্র সাড়ে তিন বছর। জন্ম থেকেই সে শারীরিক প্রতিবন্ধী। তবে চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য নেই পরিবারের। কথিত চিকিৎসার নামে শিশুটিকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয় মাটির গর্তে। বিশেষ করে ক্ষুধার সময় প্রচণ্ড কান্নাকাটি করলে শিশুটিকে গর্তে ঢুকিয়ে খাওয়ান মা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার মুরইছড়া চা-বাগানের সনচড়ি সাঁওতাল ও অনিল সাঁওতালের একমাত্র সন্তান গোপাল সাওতাল। জন্মের পর থেকে শিশুটি স্বাভাবিকভাবে দাঁড়াতে বা বসতে পারে না। তাই খাওয়ানো ও অন্যান্য পরিচর্যার জন্য মা সনচড়ি এরকম একটা গর্ত করেছেন। ঘরের মেঝেতে করা সেই গোলাকার গর্তে সন্তানকে দাঁড় করিয়ে খাওয়ান, যত্ন করেন। না হলে সে ভাঁজ হয়ে পড়ে থাকে। মা সনচড়ি ঘরের কাজ সামলানোর পাশাপাশি সারাক্ষণ ছেলেকে দেখে রাখেন। বাবা অনিল সাঁওতাল চা-বাগানে কাজ করেন। অভাব-অনটনের সংসারে সন্তানের চিকিৎসা করানো তাদের পক্ষে অসম্ভব।

গোপাল সাঁওতালের মা সনচড়ি সাঁওতাল জানান, ‌শিশুটির চিকিৎসার জন্য সিলেটের খাদিমনগরের একটি সামাজিক প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানকার চিকিৎসক বলেছেন, শিশুটিকে নিয়মিত ফিজিওথেরাপি দিতে হবে। এটাই তার উন্নতির একমাত্র পথ। কিন্তু এ ধরনের থেরাপি নিয়মিত নেওয়ার মতো আর্থিক সামর্থ্য নেই পরিবারের। এজন্য বুকসমান গর্তে শিশুটিকে দাঁড় করিয়ে রাখেন। বিশেষ করে খাওয়ার সময় তাকে এভাবে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়।

বাবা অনিল সাঁওতাল বলেন, একমাত্র সন্তানটি যেন একদিন নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে, নিজের মতো করে হাঁটতে পারে এটাই আমাদের চাওয়া।

এ বিষয়ে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মহিউদ্দিন বলেন, শিশুটির প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা খুব শিগগির করা হবে। একইসঙ্গে সরকারি চিকিৎসার জন্য যা প্রয়োজন তা করা হবে।