নিজস্ব প্রতিবেদক
মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের আওতাধীন রাজকী চা-বাগানে এবার সুইস ব্যাংকে পাচারকৃত টাকা ফেরত এনে বিনা সুদে দরিদ্র মানুষের মধ্যে লাখ থেকে কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ দেয়ার নামে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে ‘অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ’ নামে একটি সংস্থা। শুধুমাত্র জাতীয় পরিচয় পত্র (এনআইডি) দিয়ে বিনা সুদের এমন ঋণ সুবিধার কথা বলে কথিত সংস্থাটির নামে হাজার হাজার নারী-পুরুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে তিন হাজার করে টাকা করে কয়েক কোটি টাকা।
জুড়ী উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নে রাজকী চা-বাগানে শনিবার ১৪ অক্টোবর প্রতারক চক্র সাধারণ মানুষেরদের কাছ থেকে বিনা সুদে লাখ টাকার ঋণ দেবে বলে তাদের এনআইডি কার্ডের ফটোকপি ও মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে। এই ব্যাপারে জানতে পেরে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম সেলু ও ইউপি সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হন। এসময় তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা কোন যৌক্তিক উত্তর দিতে পারেনি। পরবর্তীতে তাদের ফুলতলা ইউনিয়নে নিয়ে আসা হয় এবং জুড়ী থানায় তাদের হস্তান্তর করা হয়। প্রতারক চক্রের একজন বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ ইউনিয়নের শংকর এবং আরেক জন বিশু সাঁওতাল যার বাড়ি সুকু বস্তি গ্রামে।
জানা গেছে, ‘অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ’ নামে সংস্থাটি এক শ্রেণির নারী ও তরুণ-তরুণীদের প্রলুব্ধ করে এক শক্তিশালী সিন্ডিকেট তৈরি করে বিনা সুদের ঋণ প্রদানের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়ার এমন ফাঁদ পেতেছে।
‘বাংলাদেশ থেকে সুইস ব্যাংকে পাচার করা কালো টাকা কিছু দিনের মধ্যেই উদ্ধার করে এনে দরিদ্র-দুস্থ কর্মমুখী মানুষের মধ্যে বিনা সুদে ঋণ দেওয়া হবে। অবস্থা ভেদে গরিব-দুস্থদের ১ লাখ টাকা করে দেওয়া হবে। স্বাবলম্বী, সচ্ছল ও ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের ১ লাখ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হবে। এসব ঋণের টাকা মাত্র ১ হাজার টাকা কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে।’ সংস্থাটির লোকজনের এমন প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে ইতোমধ্যে সাধারণ মানুষেরা প্রতারিত হয়েছেন।
এই বিষয়ে ফুলতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম সেলু বলেন, “এই প্রতারক চক্র তাদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলে সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। সে বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম বলে আজকে তাদেরকে ধরতে পেরেছি। এবং এই প্রতারক চক্রকে জুড়ী থানায় হস্তান্তর করি।”
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রঞ্জন চন্দ্র দে বলেন, “অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ নামে এই সংস্থা আমাদের কাছ থেকে অনুমতি পত্র না নিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করছে। এবং তাদের ব্যাপারে আমরা আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছি।”
অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ নামে প্রতারক চক্রের কাছ থেকে এই সংস্থার সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশারের ফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
আপনার মতামত লিখুন :