গণহত্যাকারীদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই: জামায়াত আমির


প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৪, ৯:৪৫ পূর্বাহ্ণ / ৮৭
গণহত্যাকারীদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই: জামায়াত আমির

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, গণহত্যাকারীদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। কেননা রাজনীতি করতে হবে দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে, বাইরের কারও সাহায্য নিয়ে নয়।


শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গায় আল ফারুক সোসাইটিতে খুলনা মহানগর ও জেলা জামায়াতের আয়োজিত রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


ডা. শফিকুর রহমান বলেন, রাজনৈতিক দলসহ সব পর্যায়ের স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরি করে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিয়ে সম্মানের সঙ্গে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিদায় নিতে হবে। বছরের পর বছর দেরি করলে আগাছা জন্ম নিতে পারে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে, তৃতীয় শক্তির উদ্ভব হতে পারে।


শিক্ষা সংস্কার কমিশনে আল্লাহকে স্বীকার করেন না এমন লোকদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিক্ষা সংস্কার কমিশনে কমপক্ষে একজন আলিয়া ও একজন কওমী নেসাবের আলেমকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

বিডিআর বিদ্রোহের নামে ৫৭জন চৌকস সেনা সদস্য হত্যাসহ দেশের সব হত্যাকাণ্ড এবং এর মাষ্টারমাইন্ডদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে জামায়াত আমির বলেন, তা না হলে আবারও জালিমদের আগমন হতে পারে, তৃতীয় শক্তির উদ্ভব হতে পারে।


জামায়াত আমির বলেন, বিগত পনের বছরের আওয়ামী শাসনামলে রাষ্ট্রের কোনো নাগরিক লুটপাট ও জুলুমের বাইরে ছিলেন না। হাজারো মানুষের, মা-বোনদের, শিশুর কান্নার রোল আল্লাহর আরশে পৌঁছে গেছে। যার ফলেই জুলাই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সৃষ্টি হয়।


তিনি বলেন, বিডিআর হত্যার মধ্যদিয়ে ফ্যাসিবাদী শাসনের প্রথম ধাপ শুরু হয়। এরপর জামায়াতের ওপর স্টিম রোলার চালানো হয়। পর্যায়ক্রমে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি দিয়ে অথবা কারাগারে রেখে হত্যার মধ্য দিয়ে শেষ পর্যন্ত জামায়াতকে নিশ্চিহ্ন করার অপচেষ্টা চালানো হয়। যারা সারাজীবন ইসলামের দাওয়াত দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধেই ইসলাম অবমাননার কথিত অভিযোগ আনা হয়। কিন্তু ইতোমধ্যেই জামায়াতের বিরুদ্ধে অভিযোগকারীরা গ্রেপ্তার হতে শুরু হয়েছে। বর্তমান সরকার ওইসব ষড়যন্ত্রকারীদের বিচারের আওতায় এনে একটি বিচারিক কার্যক্রমের সূচনা করবে বলেও তিনি আশা করেন।


কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে রুকন সম্মেলনে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মো. মোবারক হোসাইন এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চল সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ।
উল্লেখ্য, বিগত ১৫ বছর পর এই প্রথমবারের মতো জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে নগরীর আল ফারুক সোসাইটিতে প্রকাশ্যে রুকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো। রুকন সম্মেলনকে কেন্দ্র করে মহানগরী ও জেলা জামায়াতের নেতাকর্মীদের মধ্যে ছিল উৎসবের আমেজ। এর আগে ২০১০ সালে নগরীর শিববাড়ি মোড়ে প্রকাশ্যে মহাসমাবেশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এরপর প্রকাশ্যে আর কোন কর্মসূচি পালন করতে পারেনি খুলনা জামায়াত।


রুকন সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জামায়াতে ইসলামীর খুলনা অঞ্চল টিম সদস্য অধ্যক্ষ মশিউর রহমান খান ও মাস্টার শফিকুল আলম, সাতক্ষীরা জেলা আমির মুহাদ্দিস রবিউল বাশার, বাগেরহাট জেলা আমির মাওলানা রেজাউল করিম, মহানগরী নায়েবে আমির অধ্যাপক নজিবুর রহমান, খুলনা জেলা নায়েবে আমির মাওলানা গোলাম সরোয়ার ও অধ্যক্ষ মাওলানা কবিরুল ইসলাম, সাতক্ষীরা জেলা নায়েবে আমির অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম, বাগেরহাট জেলা নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট শেখ আব্দুল ওয়াদুদ, সাতক্ষীরা জেলা সেক্রেটারি মাওলানা আজিজুর রহমান, বাগেরহাট জেলা সেক্রেটারি শেখ মো. ইউনুস, মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শাহ আলম ও প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম, খুলনা জেলা সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মঈনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস ও প্রিন্সিপ্যাল গউসুল আযম হাদী প্রমুখ।

সূত্র:কালবেলা